দেখতে দেখতে পুজো এসে গেল। গত সপ্তাহে মহালয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই পুজোর তোরজোর। নিউজার্সি তে আজকাল বেশ কয়েকটি মহালয়ার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় আনন্দমন্দিরের মহিষাসুর মর্দিনী গীতি আলেখ্য, এবং ভারত সেবাশ্রম এ অনুষ্ঠিত দেবী আবাহন। আনন্দ মন্দিরএর অনুষ্ঠানের এবছর দশ বছর পূর্তি হলো। প্রতি বছরের মত, এবারেরও অরুণ ভৌমিকের পরিচালনায় জড়ো হয়েছিলেন নিউ জার্সির বেশ কিছু প্রথিতযশা শিল্পী। সেই সঙ্গে, রবিবারের ভোর রাত্রে বিছানা ছেড়ে, সেজে গুজে মন্দিরে এসে হাজীর হয়েছিলেন প্রায় শ দুয়েক শ্রোতা। তার আগের ভোরে, সেই শিল্পী এবং শ্রোতাদের অনেকেই হাজীর ছিলেন ভারত সেবাশ্রমে। নিতান্ত প্রানের টান না থাকলে, এরকম পর পর দুই রাত্রি জেগে দেবীকে আবাহন জানাতে খুব বেশি লোক উত্সাহিত হবেন না। আসলে বাণী কুমার, পঙ্কজ মল্লিক , বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুর মর্দিনীর সুর না শুনলে অনেক বাঙালির মনেই পুজো পুজো ভাব আসে না। তাই নিউজার্সির আকাশে বাতাসে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জি। আগামী কাল থেকে পুজো।
কিন্তু এবার পুজোয় কি করব, সেটা ভাবতে গিয়েই একটু খটকা লাগলো। গান বাজনা শুনব, নাটক নাচ দেখব, বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দেব, খাওয়া দাওয়া করব, সবই ঠিক আছে! কিন্তু এসব তো প্রতি বছরই করে আসছি। এবার কি অন্য কিছু করা যায় না? পুজো মন্ডপের কোন একটা কোনে বা ঘরে বসে, সাহিত্য পাঠ, সাহিত্য চর্চা করলে কেমন হয়? পুজো সংখ্যা থেকে কোন গল্প পড়া হল, কিম্বা কবিতা পাঠ করা হল – কেমন হবে তাহলে ব্যাপারটা? সবাইকে আসতে হবে এমন কোন কথা নেই। কিম্বা, কয়েকটা তাসের টেবিল পেতে দিলে কেমন হয়? একটা ক্যারাম বোর্ড? দাবা বোর্ড থাকলেও ক্ষতি নেই। একটা অঘোষিত ফ্যাশন শো হয়ে যাক না? সবাই তো সেজে গুজেই আসবেন, কিন্তু কিছু গুপ্ত বিচারক মিলে যদি কোন সুন্দরীকে পুজোর সেরা বলে ঘোষণা করেন, তাহলে কেমন হয়? অন্যেরা কি খুব রাগ করবেন? পুজো মন্ডপ থেকে নিশ্চিত ভাবে অসংখ্য পোস্টিং হবে ফেস বুকে, টুইটারে! প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় কিছু বাছাই পোস্ট দেখালে কেমন হয়? কেবল #njpujo ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
এখন আমি তো অনেক কিছুই বললাম, এবার আপনারা কিছু বলুন? আপনারা পুজোয় এবার কি করতে চান? মতামত শোনার অপেক্ষায় রইলাম।